কিছু আবেগপ্রবন ভালবাসার গল্প


চায়ের দোকানে কাজ করা ছেলেটির কাজ। সবাই তাকে বলটু বলে ডাকে। কেউ কেউ টোকাই ও বলে। হ্যা ছেলেটি টোকাই। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো তার কাজ। ছেলেটি টোকাই হলেও সহজে কারো কাছে হাত পাতে না। তাই চায়ের দোকানে কাজ করে। বলটুর বয়স কত আর হবে ৭-৮। যেই বয়সে একটা ছেলেকে স্কুল এ থাকার কথা সেই বয়সে ছেলেটা চায়ের দোকানে কাজ করে। টোকাইদের জন্য স্কুল আছে। সেই স্কুল এ ভর্তি হলে কাজ করবে কখন? আর কাজ না করলে পেটে ভাত জুটবে না। . বলটু নামের ছেলেটি তার পরিচয় জানে না। তার একটাই পরিচয় টোকাই।কে তার বাবা? কে তার মা? এটা বলটু জানে না। ছোট বেলায় তার বুড়ি মায়ের কাছে শুনেছে। বুড়ি মা তাকে সকাল বেলা রাস্তার ধারে পরে থাকতে দেখে। সেখান থেকে তুলে এনে বলটুকে বড় করে তার বুড়ি মা।বুড়ি মা ভিক্ষা করতো। বুড়ি মাই তাকে বড় করেছ। বুড়ি মাই তার বাবা মায়ের মত বড় করেছে। ভিক্ষা করলেও বলটুকে কষ্ট দেয় নি। . কয়েকমাস আগে বুড়ি মা মারা যায়। তারপর থেকেই বলটু একা একা আছে। ক্ষুধার জালায় একদিন রাস্তায় ঘুরছিল। চায়ের দোকানদার তাকে চায়ের দোকানে কাজ দেয়। এভাবেই চলছে বলটুর জিবন। বলটুর থাকার জায়গা নেই। তাই বস্তিতে থাকে। . সন্ধার সময় রাস্তা পার হচ্ছিল বলটু। হঠাৎ একটা গাড়ি এসে বলটুকে ধাক্কা মারলো। বলটু ছিটকে গিয়ে পরলো পাশে। ছিটকে পরেই জ্ঞ্যান হারালো। তাই গাড়ি থেকে নেমে আসলো এক ভদ্র মহিলা। ভদ্র মহিলা নিজেই একজন ডাক্তার। তাই বলটুর অবস্থা দেখে গাড়িতে তুলে বাসায় নিয়ে গেল। ভালই আঘাত লেগেছে। তাই বলটুকে বাড়িতে রাখলো ভদ্র মহিলা। ভদ্র মহিলার নাম ঐশি আক্তার। রাতে ছেলেটিকে ভদ্র মহিলার বাসায় রাখলো। . রাতে আজ শান্তিতে ঘুমিয়েছে ঐশি আক্তার। আজ আর ভদ্র মহিলা সেই বাজে সপ্নটি দেখে নি। ভদ্র মহিলা প্রত্যেক দিন একটা বাজে সপ্ন দেখে। একটা বাচ্চা ছেলে বলছে "মা কেন আমাকে দুরে সরিয়ে দিলে? কি অপরাধ করেছিলাম আমি" আরো অনেকদিন অনেক কথাই বলে সপ্নে। কোনদিন শান্তিতে ঘুমাতে পারেন না। কিন্তু আজ সেই সপ্নটি দেখে নি। . ডাক্তারি ভর্তি হওয়ার কিছুদিন পরে পাভেল নামের একটি ছেলের সাথে বন্ধুত্ত হয় ঐশির। তাদের বন্ধুত্তটা খুব ভালই ছিল। একদিন পাভেল ঐশিকে শারিরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেয়। প্রথমে ঐশি পাভেলের প্রস্তাবে রাজি হয় না। পরে শারিরিক ক্ষুদা মিটাতে ঐশিও পাভেলের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়। তারা প্রায় ই তাদের মধ্যে তাদের আদিম খেলায় লিপ্ত হত। ঐশি এবং পাভেল সচেতন ছিল। তাই তারা ঝুকিমুক্ত থাকতো। . এভাবে চলতে চলতে ঐশির ডাক্তারি পড়া শেষ হয়ে যায়। পাভেলের সাথে সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়। তখন ঐশি একটি হাসপাতালে চাকরি নিয়েছে। ঐশি বুঝতে পারে সে গর্ভবতী। কিন্তু এ সন্তান হলে তো ঐশির সন্মান থাকবে না। কিন্তু ঐশি সন্তান নষ্ট করে না। . হঠাত একদিন ঐশির সন্তান হয়। সন্তানটি দেখতে অনেক সুন্দর। চেহারাটা মায়াময়ী। দেখলে মায়া হয়। কিন্তু এই সন্তানের কথা সমাজ জানলে ঐশি সমাজে মুখ দেখাতে পারবে না। তাই রাতের আধারে সন্তানটি কে একটি বস্তির পাশে রেখে আসে। সব শেষ আর চিন্তা নেই। পরেরদিন থেকে ঐশি এই বাজে সপ্নটা দেখতে থাকে। একটি ছেলে বলছে "মা আমাকে জন্ম দিয়ে আমাকে ফেলে দিলে কেন?" . পরে সেখানে বাচ্চাটিকে খুজতে গিয়ে পায় না। কিছুদিন পরে বাড়ি থেকে ভাল ঘরে বিয়ে হয় ঐশির। কিন্তু সেই সংসার টেকে নি ঐশির। ঐশির অনেক চেষ্টায় ও যখন কোন সন্তান হল না। তখন ঐশিকে তার শশুর বাড়ি থেকে অনেক অপবাদ দেয়। . তারপরে আর কোন বিয়ে করে নি ঐশি। ডাক্তারি করে মানুষের সেবাকে বেছে নিয়েছে।তবুও সেই সপ্নটি ভুলতে পারে নি।ঐশি আক্তার। সেই সপ্ন তাড়া করে বেড়ায়।কিন্তু এই ছেলেটা বাড়ি আসার পরে সেই সপ্নটি দেখে নি। . ঐশি আক্তার হাসপাতাল থেকে ফোন তারাতারি হাসপাতালে চলে যায়। কাজ সেরে বাসায় ফেরার সময়ে ভাবে "কে এই ছেলে? যার কারনে আমার এইরকম হয়েছে। বাসায় গিয়ে জানতে হবে" বাসায় গিয়ে ছেলেটির খোজ করে। কিন্তু খুজে পায় না। জানতে পারে ছেলেটি সুস্থ হয়ে সকালে চলে গেছে। ঐশি আক্তার ছেলেটিকে খুজতে থাকে.……… . আমাদের সমাজে এইরকম অনেক শারিরিক সম্পর্ক হচ্ছে। কেউ কেউ আবার প্রেমিকের সাথে বিচ্ছেদ হচ্ছে। মাঝে মাঝে সন্তানের জন্ম দিয়ে ফেলে রেখে আসছে কোন এক জায়গায়। কিন্তু বাচ্চাটির কি অপরাধ? দুইজন নারি পুরুষের শারিরিক ক্ষুদার জন্য কেন কষ্ট পেতে হবে বাচ্চাটিকে? পৃথিবিতে জন্ম নেয়া কি তার অপরাধ? তাহলে কেন কষ্ট পেতে হয় বাচ্চাটিকে। আর এই সব ছেলেরা অনেকেই হয়ে যায় টোকাই। . -- Rabby Mondol - See more at: http://valobasharl.blogspot.com/2015/03/blog-post_37.html#sthash.5Xsi4MxB.dpuf

0 comments:

Post a Comment